April 20, 2024, 9:17 am

শিরোনাম :
বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সাহাদাত হোসেন রনি পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সাহাদাত হোসেন রনি ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবসে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সাহাদাত হোসেন রনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে আমাদের ধরে রাখতে হবে: সাহাদাত হোসেন রনি ৭ মার্চের ভাষণ সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য ঐতিহাসিক ভাষণ: সাহাদাত হোসেন রনি একুশের মূল চেতনা আমাদের তরুণ প্রজন্মকে ধারণ করতে হবে: সাহাদাত হোসেন রনি একুশ আমাদের চেতনা, একুশ আমাদের বিশ্বাস: সাহাদাত হোসেন রনি স্বাধীনতার পূর্ণতার দিন বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন: সাহাদাত হোসেন রনি কক্সবাজার ১ আসনে নিশ্চিত পরাজয় জেনে শেষ মূহুর্তে জাফর আলমের ভোট বর্জনের ঘোষণা বাঙালি জাতির আস্থার নাম হলো ছাত্রলীগ: সাহাদাত হোসেন রনি
ময়মনসিংহে বিএনপির সমাবেশে জনতার ঢল

ময়মনসিংহে বিএনপির সমাবেশে জনতার ঢল

ডিএন২৪ ডেস্কঃ : অবিলম্বে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ক্ষমতাসীন ভোট ডাকাতির সরকার সারাদেশে জুয়া আর ক্যাসিনোর আসর বসিয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার তিনি ময়মনসিংহে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। সরকারের কাছে তিনটি দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই। অবিলম্বে সংসদ বাতিল ও সরকারকে পদত্যাগ করে নতুন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। একইসাথে অবিলম্বে ময়মনসিংহ সহ দেশের সব নেতাকর্মীর মুক্তির দাবি জানান মির্জা ফখরুল। ময়মনসিংহ বিভাগ হওয়ার পর গতকাল প্রথম সমাবেশ করলো বিএনপি।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গণতন্ত্রের সংগ্রামের জন্য দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ছোটো ছেলে হারিয়েছেন। বড় ছেলেকে লন্ডনে বাস করতে হচ্ছে। তিনি নিজেও ১৮ মাস ধরে কারাগারে। আমরা অবিলম্বে দেশনেত্রীর মুক্তি দাবি করছি। আজকের সমাবেশই প্রমাণ করে দেশনেত্রীর জনপ্রিয়তা কতো? তিনি দেশের কোটি মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন এবং দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রতীক। প্রতিদিন তিনি আরো শক্তিশালী হচ্ছেন।
তিনি বলেন, সরকার মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও তারা উল্টো কাজ করে। তারা অতীতেও রক্ষী বাহিনীর দ্বারা দেশের মানুষ ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের নির্যাতন করেছে। আজকেও ছাত্রদল যুবদলের নেতাদেরকে ধরে নিয়ে গুলি করছে পংগু করছে তারপরও কেউ বিএনপিকে ছেড়ে যায়নি। এটাই গণতন্ত্র ও বিএনপি। আমাদের সংগ্রাম শহীদ জিয়ার স্বাধীন পতাকা রক্ষার সংগ্রাম।
সরকারের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, গোটা দেশে জুয়া আর ক্যাসিনোর আসর বসিয়েছে সরকার। তারা ৩০ ডিসেম্বরের ভোট ২৯ ডিসেম্বর রাতের অন্ধকারে করেছে। এটা সংবিধানের স্পষ্ট লংঘন। তারা ব্যাংক লুট করেছে। সব টাকা পাচার করে সুইস ব্যাংকে জমা করছে। সরকারে আসার পর আওয়মী লীগ অনেক কথা বলেছিল একটাও রাখেনি। তারা পুলিশকে দিয়ে ভোট করেছে। যারা জনগণের অধিকার লংঘন করে অবৈধ আইন প্রণয়ন করে তাদের প্রতিরোধ করা সাংবিধানিক দায়িত্ব। আজকে খালেদা জিয়া মুক্ত থাকলে সরকারের তখতে তাউস উল্টে যেত। সুতরাং আসুন সকলে মিলে এই জালিম সরকারকে হটিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি।  
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে বৃহস্পতিবার বিকেলে ময়মনসিংহ মহানগরীর কৃষ্ণচূড়া চত্বরে এই সমাবেশের আয়োজন করে ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপি। ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক একেএম শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দের পরিচালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন, উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা এমরান সালেহ প্রিন্স, ফজলুল হক মিলন, কামরুজ্জামান রতন, শাহ ওয়ারেছ আলী মামুন, শামা ওবায়েদ, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, শামীমুর রহমান শামীম, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসাইন, স্বেচ্ছাসেবক দলের আব্দুল কাদির ভুইয়া জুয়েল, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, যুবদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকুনেত্রকোনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডাঃ আনোয়ারুল হক, জামালপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফরিদুল কবির তালুকদার শামীম প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল আউয়াল মিন্টু, স্বেচ্ছাসেবক দলের গোলাম সরোয়ার, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার, শায়রুল কবির খান, জেলা বিএনপির অ্যাডভোকেট এমএ হান্নান খান, ওয়াহিদুজ্জামান শাকিল, মাসুদ তালুকদার, সাবেক ছাত্রদল নেতা মামুন বিন আব্দুল মান্নান, এছাড়া ময়মনসিংহ বিভাগের জামালপুর, নেত্রকোনা, শেরপুর ও কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল, মহিলা দল, কৃষকদল, তাঁতী দল, শ্রমিক দল সহ বিভিন্ন অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। এর আগে একই দাবিতে বরিশাল, চট্রগ্রাম, খুলনা, সিলেটে সমাবেশ হয়। গতকাল দুপুর আড়াইটায় সমাবেশ শুরু হলেও এরআগে থেকেই সমাবেশস্থলে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করে। তবে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা গাড়ি থেকে বিএনপির নেতাকর্মীদের আসতে বাধা দেয় পুলিশ।  তারপরও সমাবেশস্থলে জনতার ঢল নামে। সব নেতাকর্মী দাবি- বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, সরকারের পতন। এসময় তারা ‘দুর্নীতিবাজ ও স্বৈরাচারী সরকারের বিদায় চাই, নিতে হবে, ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই, দিতে হবে’, ‘খালেদা জিয়ার কিছু হলে, জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে’, ‘আমার নেত্রী আমার মা, বন্দি থাকতে দিবো না’ ইত্যাদি স্লেøাগান দিতে থাকেন। সমাবেশকে কেন্দ্র করে গৌরীপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শাহজাহান সিরাজ, যুবদলের সাইফুল হাসান শোভন ও মাসুদ পারভেজ কার্জনকে গ্রেফতার করেছে। এরআগে সমাবেশের জন্য তিনটি জায়গার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করে স্থানীয় বিএনপি। কিন্তু সমাবেশের অনুমতি দেয়া না দেয়া এবং জায়গা নির্ধারণ নিয়ে নানা টালবাহানা করে পুলিশ। সবশেষে বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টাকা দিকে ময়মনসিংহ রেলস্টেশনের পাশে কৃষ্ণচূড়া চত্বরে সমাবেশের অনুমতি দেয়। বিএনপির সমাবেশ ঘিরে ময়মনসিংহ শহরজুড়ে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে একাধিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়েই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে বন্দি রাখা হয়েছে। কারণ নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার ভয়েই আওয়ামী লীগ ৩০ ডিসেম্বরের আগে ২৯ ডিসেম্বর রাতে ভোট করেছে। এই সরকার দুর্নীতিবাজ ও অনির্বাচিত। তারা লুটেরাদের সরকার। ক্যাসিনো ব্যবসায়ীদের সরকার। আজ দেশের অর্থনীতি ধ্বংস। এতো লুট করা টাকা কোথায় গেছে? সম্প্রতি দেখছেন টাকা কাদের হাতে? মসজিদের শহর ঢাকাকে ক্যাসিনোর শহর বানিয়েছে অবৈধ সরকার।
তিনি বলেন, ছোট নেতাদের হাতে যদি এতো টাকা থাকে তাহলে বড় নেতাদের বাসায় কত টাকা আছে? সকল দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে বিচার করুন। না হলে জনগণ নিজেই বিচার করবে। এই সরকার এখন কোনো কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনা। সুতরাং বাকশাল ও দুর্নীতিবাজ সরকারের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে। বাংলাদেশে গণতন্ত্রের বিকল্প বিএনপি। অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ফের রাজপথে নামতে হবে। ইনশাআল্লাহ সুদিন ফিরে আসবে।
মির্জা আব্বাস বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাথেও এখন দেখা করতে দেয়না। সিলেটে সমাবেশে বাধা দেয়া হয়েছে। ময়মনসিংহে বাধা দিয়েছে। আমি বলবো যেখানেই বাধা আসবে সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। ক্ষমতাসীন সরকার রাতের অন্ধকারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় ভোট করেছে। আমাদের হাজারো নেতাকর্মী জেলহাজতে। তারপরও কিন্তু বিএনপি নেতাকর্মীরা হতাশ হয়নি। খালেদা জিয়ার মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, ক্যাসিনো নাকি আমি শুরু করেছি। কোনো মুসলমান এ ধরনের মিথ্যা কথা বলতে পারে জানা ছিলনা। তারা অনর্গল মিথ্যা বলে। ১২ বছর বিএনপি ক্ষমতায় না থেকেও যদি তাদের টাকা দিতে হয় তাহলে তো তারেক রহমানের পা ধুয়ে পানি খাওয় উচিৎ। দেশের ব্যাংক বীমা সবই লুট করেছে সরকার। তারা রাস্তার উন্নয়নের নামে নিজেদের পকেট উন্নয়ন করে।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, এখন থেকে সমাবেশে বাধা দিলে বাধবে লড়াই। ৩০ ডিসেম্বরের ভোট যারা ২৯ ডিসেম্বর রাতে পোশাক পরে ভোট করেছেন দয়া করে ভালো হয়ে যান। জনগণের ভাষা বুঝুন। কোনো ব্যক্তি বা দলকে রক্ষায় কাজ করলে ফল আসবে না। গণতন্ত্রের স্বার্থে কাজ করুন। তবে আমরা সবাই ভালো থাকবো।
তিনি বলেন, আমরা ৭২-৭৪ সালে ব্যাংক ডাকাতির কথা শুনেছি। আজকেও একই অবস্থা। গুম খুন ধর্ষণসহ সব অন্যায় বেড়েছে। সরকার এখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে নাকি কাজ করছে। অথচ তাদের নেতাকর্মীদের বাড়িতে কোটি কোটি অবৈধ টাকা মিলছে। আজকে সবার মুখে একই আওয়াজ এই সরকার দুর্নীতিবাজ। এখন সময় এসেছে সকল অন্যায় দুর্নীতির চূড়ান্ত হিসেব নেয়ার। কেউ বাধা দিলে তাকে পাল্টা আঘাতের অধিকার আমার আছে। আমি এদেশের নাগরিক। গণতন্ত্রের মুক্তি মানে খালেদা জিয়ার মুক্তি। গণতন্ত্রের অপর নাম খালেদা জিয়া। আজকে গণতন্ত্রের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখেছে অবৈধ সরকার। মনে রাখবেন জেলখানা শুধু বিএনপি বা খালেদা জিয়ার জন্য নয়। অতএব নিজেদের নিরাপত্তার জন্য খালেদা জিয়াকে মুক্ত করুন জেলখানা খালি করুন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, শহীদ জিয়ার আদর্শ বাস্তবায়ন করতে এবং খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে ও তারেক রহমানকে দেশে নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে আন্দোলন জোরদার করতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Comments are closed.




© All rights reserved © 2020 districtnews24.Com
Design & Developed BY districtnews24.Com