March 28, 2024, 2:46 pm
ডিএন২৪ ডেস্ক
তালেবান আফগানিস্তানে প্রথম ক্ষমতায় আসে ১৯৯৬ সালে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে হামলার প্রেক্ষাপটে ২০০১ সালে তাদেরকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়।
সে বছরের ১১ সেপ্টেম্বর সকালে যুক্তরাষ্ট্রে চারটি সমন্বিত সন্ত্রাসী হামলা হয়। সন্ত্রাসীরা চারটি বিমান ছিনতাই করে নিউ ইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ও ভার্জিনিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর সদর দফতর পেন্টাগনে হামলা চালায়। ওই হামলায় আল-কায়েদার ১৯ সদস্য ছাড়াও প্রায় ৩ হাজার বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু হয়।
যুক্তরাষ্ট্র এ হামলার জন্য আল-কায়েদাকে দায়ী করে এবং আল-কায়েদাকে আশ্রয় দেয়ার অভিযোগে ওই বছরই আফগানিস্তানে হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্রসহ ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো। উৎখাত করা হয় তৎকালীন তালেবান সরকারকে।
পরে দুই দশক ধরে আফগানিস্তানে সরকার পরিচালিত হয় মার্কিন মদদে। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে মোতায়েন তাদের সৈন্য প্রত্যাহারের পরই পতন ঘটে কাবুল সরকারের।
দুই দশক পর ২০২১ সালের ১৫ আগস্ট পুনরায় সরকার গঠন করে তালেবান। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে রক্ষিত আফগানিস্তানের সরকারি তহবিল আটকে দেয় মার্কিন সরকার। ফলে কঠিন অর্থনৈতিক জটিলতায় পতিত হয় তালেবান সরকার।
এমন অবস্থায় আফগানিস্তানের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। এক প্রতিবেদনে পত্রিকাটি দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে লিখেছে :
আন্তর্জাতিক ব্যাংকিংসহ আর্থিক ক্ষেত্রেও তালেবান নেতাদের প্রবেশাধিকার সীমিত। তার মধ্যেই একটি প্রশাসন চালানোর চেষ্টা চালাচ্ছে তারা। তাদের শাসনব্যবস্থার দুটি অগ্রাধিকার হলো- অর্থনীতি ও নিরাপত্তা। এমনটাই জানিয়েছে তালেবান শাসনে আফগান প্রশাসনে যুক্ত অনেকেই।
তালেবান সরকারের অর্থনীতি
তালেবান সম্পূর্ণ অভ্যন্তরীণ রাজস্বের ওপর ভিত্তি করে গত মে মাসে একটি বার্ষিক বাজেট পেশ করেছে। ২৩ হাজার ১৪০ কোটি আফগানী (২৬০ কোটি ডলার) ব্যয় এবং ১৮ হাজার ৬৭০ কোটি আফগানি (২১০ কোটি ডলার) রাজস্ব আদায় নির্ধারণ করা আছে বাজেটে। তবে অতিরিক্ত ব্যয় এবং প্রাপ্ত রাজস্বের ব্যবধান কিভাবে মেটানো হবে, তা জানানো হয়নি বাজেটে।
আফগানিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আবদুল কাহার বলখি চলতি মাসের শুরুর দিকে কাবুলে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছিলেন, ‘আমরা একটি বাজেট তৈরি করেছি। যা সম্পূর্ণরূপে আফগান সরকারের প্রাপ্ত রাজস্বের ওপর নির্ভরশীল। আমাদের বাজেটে কোনো বিদেশী সাহায্য নেই।’
আফগানিস্তান এশিয়ার প্রাণকেন্দ্র। বলখি জানান, এই অঞ্চলের দেশগুলো একে অপরের সাথে বাণিজ্য করতে চায়। এই বাণিজ্য করতে তারা আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করতে চায়। আফগানিস্তানের রাজস্বের ঘাটতি তাই শুল্কের মাধ্যমে মেটানো হবে।
আফগান মুখপাত্র জানান, তারা এখন পাকিস্তানে কয়লা রফতানিও করছেন। তিনি জানান, ভারতসহ সব দেশে আমাদের রফতানি দ্বিগুণ হয়েছে। সরকার স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের ছোট খনি ইজারা দিচ্ছে। এতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে। আর্থিক অগ্রগতিও ঘটছে।
সরকার কর্মচারীদের বেতন দিচ্ছে। যদিও তালেবানের আগের শাসনামলের চেয়ে বেতন কমানো হয়েছে। পৌর কর্মীরা প্রতিদিন সকালে কাবুলের রাস্তায় ঝাড়ু দেন। পরিচ্ছন্নতা বিভাগের কর্মীরা নর্দমা পরিষ্কার করেন। উদ্যান বিভাগের কর্মীরা পার্কগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করেন। আন্তর্জাতিক সাহায্য না নিয়েই ব্যাংকগুলো কাজ করছে। স্কুল ও হাসপাতাল খোলা আছে।