May 21, 2024, 4:29 am
পেকুয়া প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের পেকুয়ায় র্যাপিড ব্যাটেলিয়ান এ্যাকশন (র্যাব) এর অভিযানে তিনটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় র্যাব জাকের হোসেন (৪০) নামের এক যুবককেও আটক করে। সোমবার (৩ মে) সকাল ৭ টার দিকে র্যাব উপজেলার টইটং ইউনিয়নের কাটা পাহাড় এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় নিজ বাড়ি থেকে জাকের হোসেন ও তার ছোট ভাই ওমান প্রবাসী নুরুল হোসেনকে (৩৫) কে আটক করে। তবে আটকের ৩ ঘন্টা পর সকাল ১০ টার দিকে র্যাব জাকের হোসেনের ছোট্ট ভাই প্রবাসী নুরুল হোসেনকে আটক থেকে দায়মুক্তি দেন। ধনিয়াকাটার উত্তর পাশের্^ এবিসি সড়কের ছাগল খাইয়া ব্রীজ নামক স্থানে তাকে র্যাবের গাড়ী থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আটক জাকের হোসেন কাটাপাহাড় এলাকার কবির আহমদ সওদাগরের পুত্র। কাটা পাহাড়ে বাড়িতে অভিযানের পর দ্বিতীয় দফায় র্যাব আটককৃত দু’ভাইকে নিয়ে বনকাননের পূর্ব দিকে মধুখালী দুর্গম পাহাড়ে নিয়ে যান। এ সময় মধুখালীর লম্বাঘোনার নওশা ফইল্লার আগা নামক পাহাড় থেকে ৩ টি দেশীয় তৈরী একনলা বন্দুক উদ্ধার করে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত র্যাব-১৫ এর কক্সবাজারের ওই অভিযানে যাওয়া ফোর্সটি আটক জাকের হোসেনকে থানায় সোপর্দ করেননি। স্থানীয় সুত্র জানায়, ওই দিন সকালে র্যাব-১৫ এর কক্সবাজারের একটি টীম টইটংয়ের বনকানন কাটাপাহাড় নামক এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় টইটং ৪ নং আ’লীগের সভাপতি ও ইউপি নির্বাচনে (স্থগিত) একই ওয়ার্ড থেকে মেম্বার প্রার্থী কবির আহমদ প্রকাশ কবির সওদাগরের বাড়িতে অভিযান চালায়। সেখান থেকে জাকের হোসেন ও তার ভাই নুরুল হোসেনকে আটক করে। এ দিকে র্যাবের অভিযানে আটক ও অস্ত্র উদ্ধার নিয়ে স্থানীয়রা মুখ খোলছেন। অভিযানের পর পরই কাটাপাহাড় ও বনকাননে এর তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়েছে। আটক জাকের হোসেনের মুক্তির দাবী ও অস্ত্র উদ্ধারের এ ঘটনা নাকচ করে স্থানীয়রা জড়ো হয়ে প্রচন্ড প্রতিবাদমুখর হয়েছেন। বনকানন হাজি বাজার সড়কের কাটাপাহাড়ে কয়েক শতাধিক নারী পুরুষ জড়ো হন। এ সময় তারা এ ঘটনাকে প্রহসন আখ্যায়িত করে জাকের হোসেনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে বলে তারা জোরালো দাবী জানান। এক প্রতিক্রিয়ায় জাকের হোসেনের পিতা কবির সওদাগর জানান, আমার ছেলে নিরাপরাধ। আপনারা এখানে যাচাই করে দেখুন। আমার ছেলেটি দোষী নাকি নিরাপরাধ। তাকে চক্রান্ত করে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে। আমি ৩০ বছর ওয়ার্ড আ’লীগের সভাপতি। তা ছাড়া আমি এবার মেম্বার পদে প্রার্থী হয়েছি। আমাকে সর্বনাশ করতে আমার ছেলের উপর এ অবিচার করা হয়েছে। জাকের হোসেনের মা সাবেকুন্নাহার বলেন, র্যাব আমার বাড়ির প্রতিটি রোমে তন্ন তন্ন করে তল্লাশী করে। এখানে কিছুই পাইনি। মধুখালীর দিকে নিয়ে গিয়ে তারা অস্ত্রের নাটক মঞ্চস্থ করেছে। জাকের হোসেনের ছোট ভাই র্যাব কর্তৃক আটক অত:পর মুক্তি পাওয়া প্রবাসী নুরুল হোসেন জানান, আমরা ২ ভাইকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে মধুখালীতে নিয়ে যায়। আমরা ছড়ার পাশে একটি বাসায় কয়েকজন র্যাবসহ ছিলাম। পরে দেখি পাহাড় থেকে বস্তাভর্তি অস্ত্র নিয়ে কয়েকজন র্যাব সদস্য নিচের দিকে নেমে আসছে। এ অস্ত্র কে কারা র্যাবকে দিয়েছে। আমাকে ধনিয়াকাটার উত্তর পাশের্^ সড়কে নামিয়ে দেয়। বড় ভাইকে র্যাব নিয়ে গেছে। প্রতিবাদে অংশ নেয়া ছকিনা বেগম, কুলসুমা, দিলোয়ারা, আহমদ শফি, আবু জাফর, হাসান সওদাগর সহ আরো বিপুল স্থানীয়রা জানান, জাকের হোসেন অত্যন্ত ভাল ছেলে। সে নিজের স্বার্থ চিন্তা না করে মানুষের স্বার্থের পক্ষে কাজ করে। প্রতিবাদী ওই যুবক এখানকার মানুষের সাথে তার নিবীড় সম্পর্ক। কোন মামলা মোকদ্দমাও আগে ছিলনা। ছড়া থেকে বালি তুলে ব্যবসা করে। যা ইনকাম করে তা মানুষকে বিলিয়ে দেয়। এ হল তার প্রশংসনীয় কর্ম ও উদারতা। আমরা তার উপর এমন জুলুমের বিচার চাই। অস্ত্র উদ্ধার ও আটকের বিষয়টি রাষ্ট্রপক্ষের কাছে নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্ত চাই। পেকুয়া থানার ওসি সাইফুর রহমান মজুমদার জানান, র্যাব এখনো এ বিষয়ে আইনী প্রক্রিয়া অথবা আটককৃত কাউকে থানায় সোপর্দ করেননি।