March 28, 2024, 9:42 am

শিরোনাম :
২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবসে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সাহাদাত হোসেন রনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে আমাদের ধরে রাখতে হবে: সাহাদাত হোসেন রনি ৭ মার্চের ভাষণ সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য ঐতিহাসিক ভাষণ: সাহাদাত হোসেন রনি একুশের মূল চেতনা আমাদের তরুণ প্রজন্মকে ধারণ করতে হবে: সাহাদাত হোসেন রনি একুশ আমাদের চেতনা, একুশ আমাদের বিশ্বাস: সাহাদাত হোসেন রনি স্বাধীনতার পূর্ণতার দিন বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন: সাহাদাত হোসেন রনি কক্সবাজার ১ আসনে নিশ্চিত পরাজয় জেনে শেষ মূহুর্তে জাফর আলমের ভোট বর্জনের ঘোষণা বাঙালি জাতির আস্থার নাম হলো ছাত্রলীগ: সাহাদাত হোসেন রনি সবাইকে ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সাহাদাত হোসেন রনি চৌদ্দগ্রামে বিএনএফের প্রার্থী জসিম উদ্দিনের ব্যাপক গণ সংযোগ
আ’লীগ নেতার বাগানে যেতে ৩১ লাখ টাকার সরকারি ব্রিজ!

আ’লীগ নেতার বাগানে যেতে ৩১ লাখ টাকার সরকারি ব্রিজ!

বান্দরবান প্রতিনিধি

বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে আওয়ামী লীগ নেতা বিশ্বনাথ তঞ্চঙ্গ্যার বাগানে যেতে ৩০ লাখ ৭৭ হাজার টাকায় একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের অর্থায়নে নির্মিত ব্রিজের ঠিকাদার ছিলেন রোয়াংছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং আলেক্ষ্যং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিশ্বনাথ তঞ্চঙ্গ্যা নিজেই। ক্ষমতার অপব্যবহার করে মরা ঝিরিতে ব্যক্তিস্বার্থে ব্রিজ নির্মাণ সরকারি অর্থের অপচয় ছাড়া আর কিছুই নয় অভিযোগ স্থানীয়দের।

পিআইও অফিস ও স্থানীয়রা জানান, জেলার রোয়াংছড়ি উপজেলার আলেক্ষ্যং ইউনিয়নের বিজয়পাড়ার পার্শ্ববর্তী ঝিরির ওপরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের অর্থায়নে ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে ১২ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি আরসিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। শাহ আমানত ট্রেডার্সের লাইসেন্সে ৩০ লাখ ৭৭ হাজার টাকায় যৌথভাবে ব্রিজটি নির্মাণ করেছেন বিশ্বনাথ তঞ্চঙ্গ্যা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, শুষ্ক মৌসুমে ওই ছড়ায় একফোঁটা পানিও থাকে না। শুধু বর্ষায় বৃষ্টির সময় হাঁটু পানি হয় ঝিরিতে। ব্রিজের ওই পাড়ে শুধু দুটি পরিবারের ১৬ জন সদস্য বসবাস করেন।

এরা হলেন- উপনজয় তঞ্চঙ্গ্যার পরিবার, তার ছোটভাই পিতলজয় তঞ্চঙ্গ্যা, বোন জামাই পিচ্ছলচান তঞ্চঙ্গ্যা এবং পত্রমনি তঞ্চঙ্গ্যার পরিবার। দুই পরিবারের বসতির পর কোনো গ্রামীণ চলাচলের রাস্তাও নেই।

তবে এই দুই পরিবারের বাড়ির পরে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও রোয়াংছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ তঞ্চঙ্গ্যার জায়গা রয়েছে যেখানে বাগান করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

ব্রিজটি নির্মাণ নিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) সঙ্গে ঠিকাদার আওয়ামী লীগ নেতা বিশ্বনাথ তঞ্চঙ্গ্যার বাক-বিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। প্রকল্প কর্মকর্তাকে চেয়ার নিয়ে মারতে যাওয়ার অভিযোগও উঠেছে এই আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে।

বিজয়পাড়ার স্থানীয় বাসিন্দা শিশির তঞ্চঙ্গ্যা, রবীন্দ্র তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, এই ছড়ায় ব্রিজের কোনো প্রয়োজন ছিল না। ব্রিজের উপারে শুধু দুটি পরিবারের ১৬ জন মানুষ বসবাস করেন। ঝিরিতে বছরের অধিকাংশ সময় কোনো পানি থাকে না। এটি সরকারি অর্থের অপচয়।

তারা বলেন, এই অঞ্চলে অনেক পাহাড়ি গ্রাম আছে, যেখানে যাওয়ার জন্য ঝিরি ও ছড়ায় ব্রিজ খুবই দরকার। জনস্বার্থে সরকারি অর্থায়নে ব্রিজটি সেখানেই করার দরকার ছিল। কিন্তু ক্ষমতার অপব্যবহার করে অপ্রয়োজনীয় জায়গায় ব্যক্তিস্বার্থে ব্রিজটি করা হয়েছে।

এ দিকে আরসিসি গার্ডার ব্রিজটি নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, ব্রিজে উন্নতমানের পাথর, বালি এবং সিক্সটি গ্রেড রডের পরিবর্তে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। স্থানীয় ঝিরির অপরিপক্ব পাথর এবং ইটের কংক্রিট মিক্স করে ঢালাই দেয়া হয়েছে। পাহাড়ি খালের বালি এবং অটো রড ব্যবহার করা হয়েছে। ব্রিজের দু’পাশের এপ্রোস সড়কের মাটি ফিলিং কাজ সম্পন্ন করা হয়নি। কিন্তু কাজের সম্পূর্ণ বিল উত্তোলন করে নিয়েছেন ওই আওয়ামী লীগ নেতা।

তবে অভিযোগটি অস্বীকার করে রোয়াংছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বনাথ তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, কাজে কোনো ধরনের অনিয়ম হয়নি। ব্রিজের ওই পাশে বেশ কয়েকটি পরিবার বসবাস করে। আমার নিজের বাগানের জমিও আছে। এখন রাস্তা না থাকলেও ভবিষ্যতে ওইদিকে আরেকটি পাহাড়ি গ্রাম হবে।

ব্রিজ নির্মাণ কাজ নিয়ে প্রকল্প কর্মকর্তার (পিআইও) বাক-বিতণ্ডার ঘটনাও ঘটেছে বলে স্বীকার করেছেন এই আওয়ামী লীগ নেতা। পার্বত্যমন্ত্রীও জানে ব্রিজটি নির্মাণের কথা, বলেন তিনি।

রোয়াংছড়ি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. ময়নুল ইসলাম জানান, গ্রামীণ সড়ক এবং কাবিখা প্রকল্পের রাস্তার সংযোগ স্থানে পিআইও ব্রিজগুলো নির্মাণ করা হয়। কিন্তু পাহাড়ি অঞ্চলে সেটি অনেক সময় বিবেচ্য হয় না। এ ক্ষেত্রেও তেমনটি হয়েছে। তবে ব্রিজ নির্মাণের আগে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কয়েকবার আলোচনা করে ব্রিজের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছিল। পার্বত্যমন্ত্রী, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও সবার সুপারিশে ব্রিজটির অনুমোদন হয়েছে।

তিনি আরও জানান, ব্রিজটি নির্মাণ কাজ নিয়ে কাজের ঠিকাদার স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বনাথ তঞ্চঙ্গ্যা আমায় চেয়ার নিয়ে মারধরের চেষ্টা চালান। বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও অবগত করেছি।

নিউজটি শেয়ার করুন

Comments are closed.




© All rights reserved © 2020 districtnews24.Com
Design & Developed BY districtnews24.Com