March 29, 2024, 7:15 am
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বিএনপির দলীয় কার্যালয়সহ প্রায় চার শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং বিভিন্ন মালামাল নিলামে দেওয়ায় কয়েক হাজার ব্যবসায়ী ও কর্মচারীর কর্মসংস্থান ঝুঁকির মুখে পড়েছে। অভিযোগ রয়েছে, কম দামে নিলামে নিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কৌশলে বেশি টাকা আদায় করে নিচ্ছে একটি চক্র। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ী-কর্মচারী ও স্থানীয় লোকজন। এদিকে রোববার সকালে ঘটনাস্থল কালিয়াকৈর পৌরসভার মেয়র মজিবুর রহমান।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী-কর্মচারী সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০-৩৫ বছর আগে থেকে ধীরে ধীরে কালিয়াকৈর উপজেলার কালিয়াকৈর বাজার এলাকায় সড়ক ও জনপথ বিভাগের জমিতে এসব অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠে। কোনো কোনো অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠে আরো আগে। অথচ প্রতি অবৈধ স্থাপনা উঠাতে সড়ক ও জনপথ বিভাগের অসাধু কর্মকর্তা ও দালাল চক্র মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলেও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ। এর আগে উপজেলা প্রশাসন এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ একাধিক বার অভিযান চালিয়ে অল্পকিছু অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হয়েছে। কিন্তু সড়ক বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দালাল চক্রকে টাকা দিয়ে আবার এসব অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। এভাবে তারা দীর্ঘদিন ধরে সেখানে বিভিন্ন দোকানপাট দিয়ে ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য চালিয়ে আসছে। কিন্তু শনিবার দিনব্যাপী উপজেলা প্রশাসন এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ যৌথভাবে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালনা করেছেন। অভিযান চালিয়ে উপজেলা বিএনপি’র দলীয় কার্যালয়সহ প্রায় চার শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। এছাড়া ভ্রাম্যমান আদালতের উপস্থিতিতে এসব অবৈধ স্থাপনার বিভিন্ন মালামাল নিলামে দেওয়া হয়। নিলাম বাবদ ৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা সরকারী কোষাগারে জমা করা হয়েছে। ফলে কয়েক হাজার ব্যবসায়ী ও দোকান কর্মচারীর কর্মসংস্থান ঝুঁকির মুখে পড়েছে। তাদের অভিযোগ, তাদের কোনো নোটিশ দেওয়া হয়নি, মালামাল সরিয়ে নেওয়ার সময় দেওয়া হয়নি। এছাড়া কম দামে নিলামে নিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কৌশলে বেশি টাকা আদায় করে নিচ্ছে একটি চক্র। এতে প্রায় কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এসব ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ী-কর্মচারী ও স্থানীয় লোকজন।
এদিকে খবর পেয়ে রোববার সকালে কালিয়াকৈর পৌরসভার মেয়র মজিবুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এসময় তিনি ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ী-কর্মচারী বিভিন্ন খোঁজ-খবর নেন এবং তাদের সমবেদনা জানান। পরে তিনি তাঁর পক্ষ থেকে নিলামের সব টাকা ফেরত দেওয়ার আশ^াস দেন। তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন- আব্দুল কাদের, মো. হারুন অর রশিদ, মোঃ এবাদত হোসেন, মো. আমজাদ হোসেনসহ আরও অনেকেই।
কালিয়াকৈর পৌর মেয়র ও পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান জানান, কিভাবে ক্ষতিগ্রস্থ জনগনকে সাপোর্ট করা যায় এবং কিভাবে তারা নতুন করে কর্মসংস্থান পাবে সেজন্য মাননীয় সরকার প্রধানের কাছে আমার অনুরোধ। এছাড়া প্রায় ২৫ বছর আগে (আর এস ৬৫২) মালিকানা জমিতে আমাদের দলীয় কার্যালয় নির্মাণ করা হয়েছে। তারপরও মালামাল সরিয়ে নেওয়ার সময় না দিয়ে দলীয় কার্যালয়টি মাটির সঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ অফিস ভেঙ্গে দিয়ে একটা রাজনৈতিক দলকে স্থবির করা যাবে না। আমরা সকলেই পর্যালোচনা করছি এবং অফিসটি পূর্ণগঠন করা হবে।
কালিয়াকৈর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) মোঃ ইশতিয়াক আহম্মেদ জানান, সড়ক ও জনপথের জমিতে থাকা অবৈধ স্থাপনা আগামী ৬ মাসের মধ্যে সরিয়ে ফেলার জন্য উচ্চ আদালতের নির্দেশ রয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় ওই এলাকা থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয় এবং স্থাপনাগুলি ৪ লাখ ৯০ হাজার টাকায় নিলামে বিক্রি করা হয়েছে। তবে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
ডিএন২৪/ ঋতু