April 19, 2024, 3:24 pm
নিজস্ব প্রতিবেদক :
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত বিদ্রোহী নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে নানা মুখী তান্ডব চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। আবাসিক শিক্ষার্থীদের হলে অবস্থানে বাধা, হল প্রশাসনের নির্দেশনা অমান্য করে জোর পূর্বক অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের হলে উঠানো, দলীয় কর্মসূচীতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জোর পূর্বক অংশগ্রহণের চাপ প্রয়োগ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বিভিন্নভাবে চাপ প্রদান, দৈনিক মজুরীর ভিত্তিতে ক্যাম্পাসে কর্মরত শ্রমিকদের তালিকা নেয়ার হুমকি, ক্যাম্পাসকে মাদকের অভয়ারণ্যে পরিণত করাসহ বিভিন্ন হল ও দপ্তরে তান্ডব চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে এ সকল ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেস অফিস সূত্রে জানা যায়, বুধবার ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত নেতা মিজানুর রহমান লালন এস্টেট অফিসে আসেন। অফিস প্রধান সাইফুল আলমের কাছে তার দপ্তরে কত জন শ্রমিক দৈনিক মজুরীতে কাজ করে তার তালিকা চান তিনি। এরপর শ্রমিক নিয়োগে বিভিন্ন অনিয়ম হচ্ছে ও একজন ব্যাক্তি তা নিয়ন্ত্রণ করছে এমন অভিযোগ ও হুমকি দিয়ে চলে যান।
এবিষয়ে এস্টেট অফিসের উপ-রেজিস্ট্রার সাইফুল আলম বলেন, তারা আমার অফিসে এসে দৈনিক মজুরদের তালিকা চেয়েছিল। তাদের অভিযোগ অনুসারে কোন অনিয়মের প্রমান তাদের কাছে থাকলে এবং তা প্রমানিত হলে কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে অপরাধীর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এছাড়াও দলীয় কর্মসূচীতে হলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের জোর পূর্বক নিয়ে আসার অভিযোগ পাওয়া গেছে পদবঞ্চিত ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে।
এবিষয়ে লালন শাহ হল, শহীদ জিয়াউর রহমান হল ও সাদ্দাম হোসেন হলের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিষয়টি জানিয়েছেন। এসকল শিক্ষার্থীরা জনান, বিভিন্ন সময় তাদেরকে দলীয় কাজে ডাকা হয়। পরীক্ষা বা ক্লাসের কথা বললেও রেহাই দেওয়া হয়না। দলীয় কাজে না গেলে শিবির তকমা লাগিয়ে হল থেকে বের করে দেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয় তাদেরকে। তখন দলীয় কাজে বাধ্য হয়ে অংশগ্রহণ করে এসকল শিক্ষার্থীরা। পদ পাওয়ার আগেই হল দখল, বিভিন্ন শিক্ষক কর্মকর্তাকে হুমকি প্রদানসহ বিভিন্ন ধরণের উশৃঙ্খল কাজে জড়িয়ে পড়েছেন এসব পদবঞ্চিত ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা।
জানা যায়,গত ১২ অক্টোবর শিক্ষর্থীদের আবাসিকতা নিয়ে হল প্রভোস্টদের সাথে একটি আলোচনা সভায় বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শুধুমাত্র আবাসিক শিক্ষার্থীরাই হলে থাকবে এমন একটি সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এরপর ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উপর চড়াও হয়।মিজানুর রহমান লালনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা প্রশানকে হুমকি দিয়ে বলে আমরা যাকে বলব সে হলে থাকবে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে।
এমন নানা অযৌক্তিক বিষয়ে ক্যাম্পাসে বিভিন্নভাবে তান্ডব চালিয়ে যাচ্ছে ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত বিদ্রোহী গ্রুপের নেতা-কর্মীরা। এদের সাথে কিছু বহিরাগত মিলে ক্যাম্পাসে বিনা কারণে এ তান্ডব চালাচ্ছে, যা ক্যাম্পাসের সাধারণ শিক্ষার্থীসহ শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশের উপর মাত্রাতিরিক্ত প্রভাব ফেলছে।
অভিযোগের বিষয়ে পদবঞ্চিত বিদ্রোহী গ্রুপের ছাত্রলীগ নেতা মিজানুর রহমান লালন বলেন, আমাদের কাছে তথ্য আছে বিএনপি জামাতের লোকেরা দৈনিক মজুরীতে ক্যাম্পাসে কাজ করছে। এজন্য এস্টেট অফিসে তালিকা নিতে গিয়েছি।
এবিষয়ে প্রগতিশীল শিক্ষক সংগঠন শাপলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান বলেন, একজন শিক্ষার্থী কোন অবস্থাতেই সরাসরি এস্টেট অফিসে গিয়ে তালিকা চাইতে পারেন না। দেশরত্ন শেখ হাসিনা প্রেরিত প্রশাসনের উন্নয়নে যে কেউ বাধাগ্রস্থ করার চেষ্টা করলে তা প্রতিহত করতে শাপলা ফোরাম পাশে থাকবে।
এবিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্ম্মন বলেন, এস্টেট অফিসের বিষয়টি আমি শুনেছি। এটি খুবই দুঃখজনক। এসকল কাজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। কারো কাছে অভিযোগের প্রমান থাকলে তা যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমাধান হতে পারে।