March 28, 2023, 5:53 am
ঈশ্বরদী উপজেলা প্রতিনিধি:
পাবনায় ১২ দিনের মধ্যে পরপর ৩ টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। দুর্ধর্ষ ডাকাত দল নির্দিধায় গুলি করে এই ছিনতাইগুলো করেছে। গত২২ সেপ্টেম্বর কালাচাদপাড়ার গলির ভিতর মোঃ মনিরুল ইসলাম (৩৯) এর কাছ থেকে ৩লক্ষ টাকা ছিনতাই করে, ১লা অক্টোবর জালালপুর হাইওয়ে রাস্তার উপর এসএম সামস ইকবাল (৪৪) কে ৩ টি গুলি করে আহত করে ছিনতাইয়ে ব্যর্থ হয়ে পালিয়ে যায় এবং (৪ অক্টোবর) গাছপাড়া মোড়ে একটি পালসার মোটরসাইকেল নিয়ে তিন জন ব্যক্তি আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা প্রাণ নাশের ভয় দেখিয়ে মাহমুদা খাতুন এর নিকট থাকা নগদ ৯,০০,০০০/-(নয় লক্ষ) টাকা সহ একটি হ্যান্ড ব্যাগ বলপূর্বক ছিনিয়ে নেয়। এভাবে পাবনা শহরে পরপর তিনটি দুর্ধর্ষ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা সংঘটিত হয়। উক্ত ঘটনার পরিপেক্ষিতে পাবনা সদর থানায় একটি দস্যুতার মামলার রজু হয়। যার মামলা নং-০৮ তারিখ-০৫/১০/২০২২ইং ধারা-৩৯২ পেনাল কোড ১৮৬০।
এ ঘটনায় পুলিশের ঘুম হারাম হয়ে যায়। তারা বিভিন্ন প্রকৃয়া করেও ডাকতদলকে ধরতে পারছিলেননা। পাবনা জেলার পুলিশ সুপার মোঃ আকবর আলী মুনসী বিভিন্ন এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ ও পর্যালোচনা এবং আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে অতিঃ পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোঃ মাসুদ আলমকে এডমিন করে ছিনতাইয়ের ঘটনাটি সমাধান করার দায়িত্ব দিলে তিনি সদর থানার ওসি মোঃ আমিনুল ইসলাম ও ওসি ডিবি মুহাম্মাদ আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে থানা ও ডিবির যৌথ অভিযানে একদল চৌকস পুলিশ নিরলস ভাবে প্রচেষ্টা করে ছিনতাই কারিদের ৪ জনকে ধরতে সক্ষম হয়েছে।
বাংলা ক্লিনিকের গলিতে ছদ্ববেশে ভাড়া নেওয়া জনৈক দেলোয়ার এর বসত বাড়ীর নিচ তলায় ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, পিস্তল,গুলি,মোবাইল, জামাকাপর সহ গত দুই দিন আগে ছিনতাইকারীদের মুল পরিকল্পনাকারী সহরের দক্ষিন মাছিমপুরের মোঃ ইউসুফ আলীর ছেলে মাসুদ রানা(৩২)কে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে মাসুদ রানার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ছিনতাইকৃত মোবাইল, ব্যাগ এবং ৩ লক্ষ ৮৩ হাজার (তিন লক্ষ তিরাশি হাজার) টাকা উদ্ধার করে।
মাসুদ রানাকে আদালতের নির্দেশে ৪(চার) দিনের পুলিশ রিমান্ডে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে জানায় সে সহ আরো ৪/৫ জন ছিনতাই চক্রের সাথে জড়িত। সেই তথ্যের ভিত্তিতে তার অপরাপর সহযোগী ছিনতাইকারী ঢাকা, সাভার, আশুলিয়া, গাজিপুর সহ বিভিন্ন স্থান হতে গাইবান্ধা জেলার সাদুল্যাপুর থানাধীন গুচ্ছগ্রাম নালডিংগী গ্রামের -মোঃ ধুলা মিয়ার ছেলে আল আমিন (৩৬), মানিকগঞ্জ জেলার সদর থানাধীন জয়রা গ্রামের মৃত আইয়ুব আলী খানের ছেলে মোঃ ইব্রাহিম খান ওরফে মোর্শেদ খান ওরফে মামা (৪৯) এবং বাগেরহাট জেলার শরনখোলা থানাধীন দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে আব্দুর রহিম (৩২) কে আজ ১১ অক্টোবর মঙ্গলবার দুপুরে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা নিজ বাড়িতে থাকেনা, মুলত তাদের নির্দিষ্ঠ কোন স্থায়ী ঠিকানা নেই।
তারা প্রথমে কোন একটি এলাকাকে টার্গেট করে ভুয়া নাম ঠিকানা দিয়ে নির্জন এলাকায় ছদ্ধবেশে বাড়ী ভাড়া নিয়ে সেই এলাকায় বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং বড় বড় ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে। পরবর্তীতে নির্দিষ্ট দিনে অপেক্ষাকৃত দুর্বল এবং বয়স্ক টাকা উত্তোলনকারী ব্যক্তিদের টার্গেট করে তার পিছু নেয় এবং নির্জন স্থানে পৌছামাত্র তাদের আক্রমন করে উপর্যুপরি গুলি চালিয়ে টাকা ছিনতাই করে নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে পালিয়ে যায়।
ডাকাত মাসুদ রানা উক্ত গ্রেফতারকৃত ব্যাক্তিদের আশ্রয়, মোটরসাইকেল, অস্ত্র এবং নিরাপত্তা প্রদান করে থাকে। তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় চুরি,ডাকাতি, ছিনতাই, দস্যুতা, খুন, মাদক ব্যবসা করে থাকে। তাহাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক গ্রেফতারী পরোয়ানা মুলতবী রয়েছে। এই চক্রের আরো দুইজন সদস্য পলাতক রয়েছে তাদেরকে গ্রেফতারের অভিযান অব্যহত রয়েছে।
মঙ্গলবার বেলা তিনটায় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার এসব তথ্য দেন।